মাগুরায় ছাত্রলীগের দায়ের করা মামলায় বিএনপি ও তার অঙ্গসংগঠনের ২৪ নেতা কর্মীর জামিন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ প্রদান করেছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) সকালে জামিন শুনানীর দিনে ২৮ জন আসামি আদালতে হাজির হলে চার জনের জামিন মঞ্জুর করে পৌর বিএনপির আহ্বায়ক মাসুদ হাসান কিজিল, আমিনুর রহমান খান পিকুল জেলা ছাত্রদলে সভাপতি আব্দুর রহিম, সাধারণ সম্পাদক আবু তাহের সবুজসহ ২৪ জনের জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠান আদালত।
রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক শুনে আদালত শারীরিক অসুস্থতার কথা বিবেচনা করে জেলা যুবদলের সভাপতি ওয়াসিকুর রহমান কল্লোল ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মো. শামিমুজ্জামানসহ চারজনের জামিন মঞ্জুর করে বাকিদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
গত ২৭ আগস্ট বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশ চলাকালে সদর উপজেলা পরিষদের সামনে বোমা হামলাসহ আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হলে মাগুরা আদর্শ কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সৌরভ মোল্লা বাদী হয়ে ৩৬ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করে। এছাড়া ঘটনার দিন সদর থানা যুবদলের আহ্বায়ক সৈয়দ কুতুব উদ্দিন রানা, জেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক মুন্সী মাহমুদুর রহমান তিতাসসহ ছয় জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় মাগুরা সদর থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি সৈয়দ রফিকুল ইসলাম তুষার, জেলা যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক সৈয়দ মাহবুব আলী মিল্টন, জেলা যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক আলী হোসনসহ নেতাকর্মীরা এ মিথ্যা বানোয়াট মামলায় নেতা কর্মীদের জামিন নামঞ্জুর করায় তীব্র নিন্দা জানিয়ে মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান। গত ২৭ তারিখে মাগুরা শহরে যে অস্ত্র প্রদর্শন করা হয় তা উদ্ধারের দাবি জানান তারা।
আসামিপক্ষের আইনজীবী মো. শাহেদ হাসান বলেন, ‘যে মামলায় বিএনপি নেতা-কর্মীদের কারাগারে দেওয়া হয়েছে, সেটা একটা মিথ্যা মামলা। বাদী যে অভিযোগ করেছেন, সে ঘটনার সঙ্গে আসামিদের একজনও জড়িত নন। পুরো মিথ্যা ও ভিত্তিহীন একটা মামলায় তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’
এ বিষয়ে মাগুরা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সরকারপক্ষের আইনজীবী (পিপি) মো. মসিয়ার রহমানের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আলী আহমেদ বলেন, ওই দিন জ্বালানি তেল ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে বিএনপির কেন্দ্রঘোষিত একটি সমাবেশ চলছিল। সেখানে বোমা হামলা, অগ্নিসংযোগ ও বিএনপির কার্যালয় ভাঙচুর করেন ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীরা। একই দিনে শহরজুড়ে প্রকাশ্যে অস্ত্রের মহড়া দেন তাঁরা। উল্টো তাঁদের নেতা-কর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়। সেই মামলায় তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এটা আসলে বিএনপির আন্দোলন বন্ধে সরকারের ষড়যন্ত্রের অংশ।
জামিন শুনানী কালে আদালতে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আলী আহম্মদ, সদস্য সচিব আখতার হোসেন, যুগ্ম আহ্বায়ক খান হাসান ইমাম সুজা, ফারুকুজ্জামান ফারুক সৈয়দ রফিকুল ইসলাম তুষার সৈয়দ মাহবুব আলী মিল্টনসহ জেলা বিএনপিও অংগ সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
Leave a Reply